প্রতিকী ছবি |
সংক্রান্তি শব্দটি কে ভাঙলে দাঁড়ায় সং + ক্রান্তি। অর্থাৎ বিভিন্ন রূপে সাজে গমন৷ সংক্রান্তি শব্দের অর্থ অন্যত্র গমন বা ভিন্নরূপে অন্যত্র গমন। আগামী ১৪ ই জানুয়ারি শেষ হচ্ছে বাংলার পৌষ মাস। ১৪ তারিখ পৌষ সংক্রান্তি। এরপরে মাঘ মাসের শুরু। এই বিশেষ মুহূর্তে সূর্য ধনু রাশি ত্যাগ করে প্রবেশ করেন মকর রাশিতে। শুরু হয় সূর্যের উত্তরায়ন। সূর্যের আলোকে প্রাণ ফিরে পায় রুক্ষ কঠিন ধরা৷ তাই পৌষ মাসের শেষ দিন পালিত হয় পৌষ সংক্রান্তি বা মকর সংক্রান্তি।
এ উপলক্ষে সাবিত্রী আশ্রমে ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের সাথে পালিত হবে উত্তরায়ণ সংক্রান্তির বিশেষ আচার অনুষ্ঠান। মায়ের উদ্দেশ্য ভোগ নিবেদন ও আগত সকল ভক্তদের মধ্যে বিতরণ করা হবে মায়ের প্রসাদ।
এ বিশেষ শুভক্ষণে সকলকে সাবিত্রী আশ্রমে এসে মায়ের প্রসাদ গ্রহনের বিশেষ আমত্রণ রইল।
এবার জেনে নেয়া যাক উত্তররায়ন সংক্রান্তি বা মকর সংক্রান্তি সম্পর্কে সনাতনধর্ম কি বলে..
মকর সংক্রান্তির পৌরাণিক ব্যাখ্যাও রয়েছে। সূর্য এই লগ্নে তার ছেলে মকর অধিপতি শনি যাত্রা শুরু করেছিলেন। তাই এই দিনটিকে বাবা-ছেলের সম্পর্কের মিলনের দিন হিসেবেও পালন করা হয়। আবার মহাভারতে ভীষ্মের শরশয্যা সঙ্গে মকর সংক্রান্তির সম্পর্ক রয়েছে। কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধে ভীষ্ম শরশয্যা শুয়েছিলেন৷ পিতা শান্তনু থেকে পাওয়া স্বেচ্ছামৃত্যুর বর পেয়েছিলেন। কিন্তু তাও মৃত্যুর অধিক যন্ত্রণা সহ্য করেছিলেন কারণ সেই সময় ছিল সূর্যের দক্ষিণায়ন।
দক্ষিণায়ন কে তুলনা করা হয় রাতের সঙ্গে। রাতের বেলা সবাই যেমন বিশ্রাম করে তেমনি স্বর্গের দেবতারা টানা ছয় মাস বিশ্রাম নেন৷ ওই সময় যদি ভীষ্ম স্বেচ্ছামৃত্যু বরণ করতেন তাহলে তাকে স্বর্গের দরজায় দাঁড়িয়ে দেবতাদের ঘুম ভাঙার জন্য অপেক্ষা করতে হত।
কথিত রয়েছে সূর্যের দক্ষিণায়ন এর সময় প্রাণত্যাগ করলে পুনর্জন্ম হয়৷ আর উত্তরায়নের মৃত্যু মানে পৃথিবী থেকে চির মুক্তি। তাই ভীষ্ম অপেক্ষা করেছিলেন সূর্যের উত্তরায়ন এর জন্য। অবশেষে এলো সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। মকর সংক্রান্তির পূন্য লগ্নে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন। অন্যদিকে সূর্যের উত্তরায়ন শুরু হল খুলে গেল স্বর্গের দ্বার। ঘুম ভাঙলো দেবতাদের। তাই কর্কট সংক্রান্তি অপেক্ষা মকর সংক্রান্তি অধিক গুরুত্বপূর্ণ।
No comments:
Post a Comment