মহদ্বিষ্ণুর আর্বিভাব তত্ব


জড় জগত সৃষ্টির শুরুতে কখনো কখনো একখন্ড চিন্ময় মেঘ ব্রহ্মজ্যোতি সমন্বিত চিদাকাশের একটি ক্ষুদ্র অংশকে আচ্ছাদিত করে। সেই আচ্ছাদিত অংশের নাম “মহতত্ত্ব”। তারপর ভগবান নিজেকে মহাবিষ্ণুরুপে বিস্তার করেন এবং এই মহতত্ত্বের জলে শায়িত হন। সেই জলকে বলা হয় কারণসমুদ্র (কারণজল)। মহাবিষ্ণু যখন কারণ সমুদ্রে যোগনিদ্রায় শায়িত হন, তখন তার নিঃশ্বাস থেকে অসংখ ব্রহ্মান্ড নির্গত হয়। এই সকল ব্রহ্মান্ডগুলো ভাসমান অবস্থায় কারণ সমুদ্রের জলে সর্বত্র ইতস্তত ছড়ানো থাকে।মহাবিষ্ণু থেকে ত্রিশক্তির সৃষ্টি হয়েছে অর্থাৎ ব্রহ্মা, বিষ্ণু ও মহেশ্বর সৃষ্টি হয়েছে । ত্রিশক্তি সৃষ্টি করার পর ব্রহ্মাকে সৃষ্টির দায়িত্ব দিলেন, বিষ্ণুকে পালনের দায়িত্ব দিলেন এবং পরমেশ্বরকে ধ্বংসের দায়িত্ব দিলেন । মহাবিষ্ণুই আমাদের পিতারও পিতা, মাতারও মাতা । তিনি সকল জীবের হোতা । ব্রহ্মাকে সৃষ্টির দায়িত্ব দেওয়া হলেও তিনি প্রকৃত সৃষ্টিকর্তা নয়  কারণ ব্রহ্মার সৃষ্টি মহাবিষ্ণুর নাভি পদ্ম থেকে হয়েছে । যেহেতু ব্রহ্মার সৃষ্টি মহাবিষ্ণুর নাভি পদ্ম থেকে হয়েছে সেহেতু ব্রহ্মা প্রকৃত সৃষ্টিকর্তা নয় । মহাবিষ্ণু ব্রহ্মার ১০০শত বৎসর আয়ুষ্কাল নির্ধারণ করেছেন । তিনি ব্রহ্মার আয়ুষ্কাল(১০০) বৎসরের মধ্যে পূর্ণ অবতার হিসেবে শুধুমাত্র একবার পৃথিবীতে আবির্ভূত হন । পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণ দ্বাপর যুগে ভাদ্র মাসের কৃষ্ণপক্ষের অষ্টমী তিথিতে দেবকীর উদরে আবির্ভূত হয়েছিলেন ‌। তিনি পূর্ণ অবতার হিসেবে আর আসবেন না । তিনি ব্রহ্মার রাত্রিভাগে অংশ অবতার হয়ে আবির্ভূত হবেন । কল্কি অবতার ব্যতীতও আরও অনেক অংশ অবতার হিসেবে আবির্ভূত হবেন । ভগবানের অবতার ধারণ করার কারণ দুষ্টের দমন সৃষ্টির পালন ও সাধুদিগের পরিত্রাণ ।

No comments:

Post a Comment

সাবিত্রী-সত্যবান এবং সনাতন

  সাবিত্রী ও সত্যবান: একটি ঐতিহাসিক ও ধর্মীয় প্রেক্ষাপটে বিশ্লেষণ সাবিত্রী ও সত্যবানের কাহিনী সনাতন ধর্মের অন্যতম শ্রেষ্ঠ এক নারী-আদর্শ ও প...